ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা, যুক্তরাষ্ট্রের জরুরি ফোনালাপ
ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় :
০১-০৫-২০২৫ ১২:১৪:৫৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
০১-০৫-২০২৫ ০১:১৩:০২ অপরাহ্ন
ছবি: সংগৃহীত
জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।এমনকি ভারত পাকিস্তানে হামলা করতে পারে বলে গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে জানিয়েছে দেশটি।
এমন অবস্থায় কাশ্মিরের উত্তেজনা কমাতে ভারতকে পাকিস্তানের সাথে ‘কাজ’ করতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারত ও পাকিস্তানের নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপে এই আহ্বান জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মিরের পেহেলগামে সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলাদা করে ফোনে কথা বলেছেন এবং উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সাথে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সাথে কাজ করার জন্য বলেছেন।’
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সাথে ফোনালাপে রুবিও ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মিরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
কাশ্মিরে ভয়াবহ হামলার পর ভারত ও পাকিস্তান একাধিক পাল্টাপাল্টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করেছে। এই চুক্তি ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল)। প্রধান একটি সীমান্ত পয়েন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল করেছে এবং পাকিস্তানের দূতাবাসে থাকা সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর উপদেষ্টাদের বহিষ্কার করেছে।
জবাবে পাকিস্তান ভারতের এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে বিশেষ করে উত্তর আমেরিকা থেকে ভারতে আসা-যাওয়ার ফ্লাইটগুলোর সময় অনেক বেড়ে গেছে। ভারতের নাগরিকদের দেওয়া ভিসা বাতিল করেছে (শুধুমাত্র শিখ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় সফর বাদে)।
এছাড়া ভারতের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি সিমলা চুক্তি স্থগিত করেছে পাকিস্তান।
বাংলাস্কুপ/ডেস্ক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স